ফেনীর সোনাগাজী পৌর এলাকা ও সদর ইউনিয়নের সংযোগস্থলের ডাংগি খাল দখল করে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এভাবে বাঁধ দিয়ে যুবলীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মাছের চাষ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে পৌর এলাকাসহ সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় লোকজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। একই কারণে প্রায় ৩০০ একর জমির আউশ ধান নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রমিজেরপুল এলাকা থেকে ছেলামতের বাজার ও নুর আহমদের বাড়ির সামনে থেকে বহদ্দারহাটসংলগ্ন কুদ্দুস ডিলারের বাড়ি পর্যন্ত ডাংগির খালের প্রায় দুই কিলোমিটারে বাঁধ দিয়ে মাছের চাষ করা হচ্ছে। যুবলীগের সদর ইউনিয়ন শাখার সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুবলীগের কর্মী নূরনবী টিপু, আরিফ হোসেন, মো. রিয়াদ, নুর উদ্দিন, নুর করিম, ওয়াজিউল্লা, রফিক ও হেলাল ওই বাঁধ নির্মাণ করেছেন। তাঁরা ওই খালে পশ্চিম চরখোয়াজ মত্স্য প্রকল্পের সাইনবোর্ড পুঁতে রেখেছেন।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, এ অবৈধ বাঁধের কারণে এক মাস ধরে পৌর এলাকার চর গণেশ, সরকারি খাদ্য গুদাম এলাকা, চৌধুরী লেন, কলেজ রোড, তুলাতলি গ্রামের চাকলাদারবাড়ি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চর চান্দিয়া গ্রামের ফাতেমা মঞ্জিল, প্রাইম আইডিয়াল একাডেমি এলাকা, সদর ইউনিয়নের হালিম ডাক্তারের পুল, ছেলামতের বাজার, রমিজেরপুল এলাকাসহ বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এসব গ্রামের আউশ ধানসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হচ্ছে।
পৌর মেয়র জামাল উদ্দিন জানান, খালে অবৈধভাবে বাঁধ দেওয়ায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর নিজের বাড়ির সামনেই পানি জমে আছে।
চর গণেশ গ্রামের কৃষক আবদুল হাদী বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এ খালে মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতায় আমাদের জমির আউশ ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাঁরা জানান, শিগগিরই পানি চলাচলের ব্যবস্থা না করলে পুরো ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।’
পাউবোর সোনাগাজী শাখার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার হোসেন জানান, এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, এলাকাবাসী তাদের প্রয়োজনে বাঁধ দিয়েছে। আমরা বাঁধ দিইনি। তিনি বলেন, মাছের চাষের ফলে পানি প্রবাহে সমস্যা হবে না। তা ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় পাইপ বসানো আছে। এখানে রুই, কাতল মাছের চাষ করা হচ্ছে।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নুরুল আবসার জানান, আনোয়ার হোসেন নামে সদর ইউনিয়নে যুবলীগের কোনো নেতা নেই।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-06-26/news/73827
Saturday 26 June 2010
দেশজুড়ে অসহনীয় লোডশেডিং
ঘাটতি আড়াই হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে
বিদ্যুৎ সংকট কাটছে না। উল্টো দিন দিন তা আরো প্রকট হচ্ছে। উৎপাদনের সঙ্গে চাহিদার ফারাক বাড়তে থাকায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ে ভুগছে সারা দেশের মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টাও মার খাচ্ছে গ্যাস স্বল্পতা ও উৎপাদনকেন্দ্রগুলোতে কারিগরি ত্রুটির কারণে। এ অবস্থায় বর্তমানে দৈনিক দেড় হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ কম উৎপাদিত হচ্ছে। এতে বিদ্যুৎ ঘাটতি এখন প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও পিডিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিগুলো বলেছে, উৎপাদন ঘাটতি মোকাবিলায় গত কয়েক দিনে খোদ রাজধানীতেই ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেড করা হয়েছে। আর গ্রামাঞ্চলে সারা দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকছে না। এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যান ভূঁইয়া শফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি চাহিদার অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ পাচ্ছেন।
সন্ধ্যায় পিক আওয়ারে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানির (ডিপিডিসি) আওতায় বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়ায় এক হাজার ১০০ মেগাওয়াট। অথচ ডিপিডিসি পাচ্ছে গড়ে সাড়ে ৬০০ মেগাওয়াট। ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কম্পানি (ডেসকো) ৫৬০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পাচ্ছে মাত্র ৩০০ মেগাওয়াট। প্রায়ই বরাদ্দের পরিমাণ চাহিদার অর্ধেকের নিচে নেমে যাচ্ছে।
এদিকে বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালে রাত ৮টা থেকে ১০টা এবং ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত আধাঘণ্টা পরপর লোডশেড করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সালেহ আহমেদ বলেন, সবাই যেন খেলার অন্তত কিছু কিছু অংশ দেখার সুযোগ পায় সে জন্যই এ ব্যবস্থা। তিনি জানান, উন্মুক্ত স্থানে মিরপুর ও উত্তরায় মোট তিনটি বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করেছে ডেসকো।
বোরো মৌসুম শেষেও বিদ্যুৎ পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন হয়নি। এ প্রসঙ্গে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, প্রতি মাসে ৩৫ থেকে ৪০ মেগাওয়াট হারে চাহিদা বাড়ছে। ফলে সংকট অপরিবর্তিত রয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হিসেবে গ্যাস সংকটকে দায়ী করছে পিডিবি। গত বুধবার পিডিবির চেয়ারম্যান এ এস এম আলমগীর কবির বলেন, গ্যাসের অভাবে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন এক হাজার ৩৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও পেট্রোবাংলা সাড়ে ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। পিডিবির গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক সাইফুল হাসান বলেন, আর দুই থেকে আড়াই শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ পেলে দিনে অতিরিক্ত এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।
এদিকে বন্ধ থাকা বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্র ১৮ দিন পর গতকাল উৎপাদনের ফিরেছে। রাত ৮টা নাগাদ ৯০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এতে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিদ্যুৎ সংকট কাটছে না। উল্টো দিন দিন তা আরো প্রকট হচ্ছে। উৎপাদনের সঙ্গে চাহিদার ফারাক বাড়তে থাকায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ে ভুগছে সারা দেশের মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টাও মার খাচ্ছে গ্যাস স্বল্পতা ও উৎপাদনকেন্দ্রগুলোতে কারিগরি ত্রুটির কারণে। এ অবস্থায় বর্তমানে দৈনিক দেড় হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ কম উৎপাদিত হচ্ছে। এতে বিদ্যুৎ ঘাটতি এখন প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও পিডিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিগুলো বলেছে, উৎপাদন ঘাটতি মোকাবিলায় গত কয়েক দিনে খোদ রাজধানীতেই ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেড করা হয়েছে। আর গ্রামাঞ্চলে সারা দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকছে না। এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যান ভূঁইয়া শফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি চাহিদার অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ পাচ্ছেন।
সন্ধ্যায় পিক আওয়ারে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানির (ডিপিডিসি) আওতায় বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়ায় এক হাজার ১০০ মেগাওয়াট। অথচ ডিপিডিসি পাচ্ছে গড়ে সাড়ে ৬০০ মেগাওয়াট। ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কম্পানি (ডেসকো) ৫৬০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পাচ্ছে মাত্র ৩০০ মেগাওয়াট। প্রায়ই বরাদ্দের পরিমাণ চাহিদার অর্ধেকের নিচে নেমে যাচ্ছে।
এদিকে বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালে রাত ৮টা থেকে ১০টা এবং ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত আধাঘণ্টা পরপর লোডশেড করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সালেহ আহমেদ বলেন, সবাই যেন খেলার অন্তত কিছু কিছু অংশ দেখার সুযোগ পায় সে জন্যই এ ব্যবস্থা। তিনি জানান, উন্মুক্ত স্থানে মিরপুর ও উত্তরায় মোট তিনটি বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করেছে ডেসকো।
বোরো মৌসুম শেষেও বিদ্যুৎ পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন হয়নি। এ প্রসঙ্গে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, প্রতি মাসে ৩৫ থেকে ৪০ মেগাওয়াট হারে চাহিদা বাড়ছে। ফলে সংকট অপরিবর্তিত রয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হিসেবে গ্যাস সংকটকে দায়ী করছে পিডিবি। গত বুধবার পিডিবির চেয়ারম্যান এ এস এম আলমগীর কবির বলেন, গ্যাসের অভাবে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন এক হাজার ৩৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও পেট্রোবাংলা সাড়ে ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। পিডিবির গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক সাইফুল হাসান বলেন, আর দুই থেকে আড়াই শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ পেলে দিনে অতিরিক্ত এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।
এদিকে বন্ধ থাকা বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্র ১৮ দিন পর গতকাল উৎপাদনের ফিরেছে। রাত ৮টা নাগাদ ৯০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এতে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Subscribe to:
Posts (Atom)