Tuesday 26 April 2011

দলবাজিতে প্রশাসন গতিহীন : কর্মকর্তারা দিনের প্রথমভাগ ব্যয় করেন শেয়ার ব্যবসা নিয়ে বার বার আদেশ জারি করেও কাজ হচ্ছে না

কাদের গনি চৌধুরী

প্রশাসন চলছে ঢিমেতালে। বার বার আদেশ জারি করেও সরকারি কর্মকর্তাদের কাজে মনোযোগী করা যাচ্ছে না। ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকারি কাজে গতি আসছে না দেখে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বার বার তাগিদ দেয়া হয়। কেবিনেট সেক্রেটারি ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্রও জারি করা হয়। এর পরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সরকারের বিভিন্ন মহলে আলাপ করে জানা যায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সৃষ্ট আতঙ্ক, মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্য নতুন হওয়ায়, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় না থাকায়, মন্ত্রী ও সচিবের মধ্যে দ্বন্দ্ব, দক্ষ কর্মকর্তাদের ওএসডি করে কর্মহীন বসিয়ে রাখা, দলীয় বিবেচনায় অযোগ্যদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন, জুনিয়রদের পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়রদের পদে বসানোর কারণে প্রশাসনে অসন্তোষ তৈরি হওয়ায় কাজকর্মে গতি আসছে না। সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, কট্টর সরকারসমর্থক অফিসাররাও মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে না। তারা সরকারি কাজের চেয়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। দিনের প্রথমভাগ তারা ব্যয় করেন শেয়ার ব্যবসা নিয়ে। যার ফলে কাজে গতি আসছে না।
সরকারি কাজে গতি না আসায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরও অসন্তুষ্ট বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময় মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক এবং এর আগে জাতীয় সংসদের বাজেট বক্তৃতায় প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, সরকারে বয়স দুই বছর পার হলেও এখনও উপদেষ্টা, মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজের সমন্বয় নেই। সব সিদ্ধান্তের জন্য সবাই তাকিয়ে থাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে। সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, বেশিরভাগ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর অনভিজ্ঞতার কারণে মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি আসছে না। এছাড়া প্রশাসনিক অস্থিরতা ও ভীতিও রয়েছে। ফাইল সই করতে সবাই ভয় পায়। সরকারি কর্মকর্তা, এমনকি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কেউ কেউ কোনো বিষয়ে একা সিদ্ধান্ত নিতে চায় না। স্পর্শকাতর কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন হলে মন্ত্রী সচিবের ওপর চাপিয়ে দেন, আবার সচিব এতে রাজি না হলে প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন হচ্ছেন। গত দু’বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি অনেক আমলাও গ্রেফতার হয়েছেন। তাই ভবিষ্যতের আতঙ্কে সচিব থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনেকে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করছেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের ধীরগতি দেখে প্রতিটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি কাজে গতি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর সচিব মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবকে এ ব্যাপারে চিঠিও দেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, নতুন গণতান্ত্রিক সরকার গণমুখী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও মন্ত্রণালয়গুলো তা যথাযথভাবে দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করছে না। এর ফলে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে, সমস্যা সমাধানে এবং যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে অহেতুক বিলম্ব হচ্ছে। সেখানে আরও বলা হয়, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে অহেতুক বিলম্ব ঘটায় তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
সূত্র জানায়, প্রশাসনিক এ ধীরগতির কারণে সেবাপ্রার্থীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা অনভিজ্ঞ হওয়ায় এ সুযোগ গ্রহণ করছেন সচিবালয় কর্মকর্তারা। ফাইল নিষমত্তির ক্ষেত্রে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্বও এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন এ কর্মকর্তারা। সেবাপ্রার্থীকে ফাইলের পেছনে না ছুটলে কাজ হয় না। তদবির না করলে হয় ফাইল থেমে যায়, নতুবা ফাইল গায়েব করে দেয়া হয়। অনেক সময় কোনো অজুহাত না পেলে ফাইল থেকে জরুরি কাগজ সরিয়ে ফেলা হয়। অধিদফতর কিংবা দফতরে নিষমত্তিযোগ্য ফাইল মন্ত্রণালয়ে চলে এলে ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়ে। মন্ত্রী এবং সচিবের মধ্যে বিরোধের কারণেও সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, সমস্যার সমাধান এবং যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। বিমান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের মধ্যে বিরোধের কারণে দীর্ঘদিন এখানে ঠিকমতো কাজ হয়নি। অবশ্য মাসখানেক আগে সচিব শফিক আলম মেহেদীকে বদলি করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সংস্থাপন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনকে গতিশীল করতে নির্দেশনা দেয়া হয় যে, শাখা প্রধানরা ৭২ ঘণ্টা, উপ-সচিবরা ৪৮ ঘণ্টা এবং তদূর্ধ্ব পর্যায়ে ২৪ ঘণ্টায় ফাইল নিষমত্তি হতে হবে। কিন্তু এসব নিয়ম-কানুন মেনে ফাইল নিষমত্তি হচ্ছে না।
গত বছরের ১৪ নভেম্বর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কাজের ব্যাপারে সরকারি কর্মকর্তাদের অনীহার বিষয়ে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, অনিষমন্ন কাজের তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আনা হচ্ছে না। তবে হাতেগোনা কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের নিয়মে কাজ করে যাচ্ছে সঠিক সময়ে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পদোন্নতি ও পোস্টিংবঞ্চিত কর্মকর্তাদের আলোচনা-সমালোচনা করে দিন কাটাতে। সম্প্রতি সরকার যুগ্ম সচিব পদে বড় ধরনের পদোন্নতি দেয়। তা সত্ত্বেও বঞ্চিতদের সংখ্যা এখনও বেশি। যারা পদোন্নতি পেয়েছেন, তারা এখনও পোস্টিং পাননি। ফলে তাদের আগের জায়গায় কাজ করার ব্যাপারে বেশ কিছুটা অনীহা রয়েছে। তবে কোনো কোনো কর্মকর্তা নিজের তাগিদে আগের স্থানে কাজ করলেও মন নেই কাজে।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব এক চিঠিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফাইল নিষমত্তি করতে সকল সচিবকে লিখিত নির্দেশ দেন। এতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফাইল নিষমত্তি না করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদের এই নির্দেশের পরও সচিবালয়ে নির্দেশিকা মানা হচ্ছে না ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনে পরিচালিত বিভিন্ন অধিদফতর ও বোর্ডে ফাইলের স্তূপ জমছে। শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আবেদন ও অন্যান্য সমস্যা মাসের পর মাস এমনকি বছরেও সুরাহা হচ্ছে না। শিক্ষক-কর্মচারীদের সমস্যা দেখভালের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরে কোনো মনিটরিং সেল নেই। সূত্র জানায়, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শিক্ষক-কর্মচারীদের পদোন্নতি, বদলি, টাইমস্কেল, এমপিওভুক্তি’র আবেদনসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিদিন প্রায় তিন শতাধিক আবেদন ও অভিযোগ নথিভুক্ত হচ্ছে; কিন্তু সাধারণ আবেদন, তদবির ও অভিযোগ দ্রুত সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয় না। প্রভাবশালীদের অনৈতিক তদবির, অভিযোগ ও ফরমায়েশি কাজ নিষমত্তি করতেই মন্ত্রণালয়, অধিদফতর ও বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেশিরভাগ সময় কেটে যায়।
সরজমিনে মাউশি’তে ঘুরে দেখা যায়, মহাপরিচালক ও পরিচালক ছাড়া বিভিন্ন দফতরে ফাইলের স্তূপ জমে আছে। ফাইল গতিশীল করার জন্য শত শত শিক্ষক প্রতিদিন মাউশিতে আসছেন। জমে থাকা ফাইল নিষমত্তির বিষয়ে সংস্থার মহাপরিচালক এবং স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা শাখার পরিচালকরা নিয়মিত সংশ্লিষ্টদের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখলেও কার্যক্রম এগুচ্ছে না। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়েও একই অবস্থা বিরাজ করছে। মন্ত্রী-সচিব-সংসদীয় কমিটির বিরোধের কারণে দীর্ঘ দিন ধরে এ মন্ত্রণালয়ের কাজে কোনো গতি ছিল না। গত মাসে সচিবকে সরিয়ে দেয়ার পর কাজে কিছুটা গতি এসেছে বলে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি না থাকায় গত ৫ এপ্রিল মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ওই বৈঠকে তিনি দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সার্বিক অর্থনীতির অবস্থা মন্ত্রিসভাকে জানাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। বৈঠকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সুদের হার বৃদ্ধি, রেমিটেন্স প্রবাহ কমে যাওয়া, তারল্য নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তি রয়েছে বলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জানান।
এ বৈঠকের পর পরই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম অর্থ মন্ত্রণালয়ের সব ক’টি অনুবিভাগ/অধিশাখা/শাখায় চিঠি দিয়ে সমন্বয়কারী কর্মকর্তাদের আরও প্রো-অ্যাক্টিভ ভূমিকা রেখে শাখার কাজের সুষ্ঠু ও কার্যকর সমন্বয় সাধন নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
সংস্থাপন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনে গতি আনতে তৃণমূল পর্যন্ত ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে ‘লেস পেপার অফিস’ প্রতিষ্ঠা, ডিজিটাল স্বাক্ষর চালু এবং ই-টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে কেনাকাটার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং মন্ত্রী-সচিবদের সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পর্যন্ত একটি চেইন নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় থেকে একেবারে উপজেলা প্রশাসন পর্যন্ত সরকারি নির্দেশনার ক্ষেত্রে ই-মেইল ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে সংস্থাপন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হলে ডিসি এবং ইউএনওরা যাতে একসঙ্গে সবাই পেয়ে যান, সে উদ্দেশ্যে এসব অফিসের জন্য ই-মেইল অ্যাকাউন্টও খুলে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ডিজিটাল স্বাক্ষর চালু হলে এসব নির্দেশনার নির্ভরযোগ্যতা অনেক বাড়বে। আর মুহূর্তেই অফিসিয়াল নির্দেশনা পৌঁছে যাওয়ার কারণে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নও হবে দ্রুত। এক্ষেত্রে ডিসি এবং ইউএনওদের প্রশিক্ষিত করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালy.

চালের দাম ৫ বছরে বেড়ে দ্বিগুণের বেশি














জাহেদ চৌধুরী
বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক আগের দিন ২০০৯ সালের ৫ জানুয়ারি স্বর্ণা ও চায়না ইরি জাতের যে মোটা চালের কেজি ছিল ২৭ টাকা, গতকালের বাজারে তা বিকিয়েছে ৩৬ টাকায়। একই সময়ের ব্যবধানে নাজিরশাইল ও মিনিকেটের মতো সরু চালের দাম ৩৩ টাকা থেকে বেড়ে গতকালের বাজারে বিকিয়েছে ৫২ টাকা কেজি দরে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি’র তথ্যে চালের মূল্যবৃদ্ধির এ পরিসংখ্যান রয়েছে। আর আজ থেকে ঠিক ৫ বছর আগে ২০০৬ সালের ৭ এপ্রিল মোটা চাল বলে পরিচিত স্বর্ণা ও চায়না ইরির দাম ছিল ১৭ টাকা কেজি। আর উন্নতমানের নাজির ও মিনিকেট চালের কেজি ছিল ২২ টাকা। চালের বাজারদর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ৫ বছরে চালের দাম দ্বিগুণেরও বেশি প্রায় আড়াইগুণ বেড়েছে। সরকারি হিসাবের বাইরে গতকাল সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাজারে দুর্গন্ধমুক্ত মোটা চাল ৩৭/৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৫৮ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত মিনিকেট ৬০ টাকা কেজিও আছে। টিসিবির হিসাবে উন্নতমানের নাজির ও মিনিকেট চাল গতকাল বিকিয়েছে ৫২ টাকা দরে, যা এক মাস আগেও একই দাম ছিল। এক বছর আগে ছিল ৪৪ টাকা কেজি। ১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মাঝখানে মোটা চালের দাম বেড়ে ২০০৮ সালে ৩৬ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও ওই সরকার বিদায় নেয়ার আগেই দাম অনেক কমে। তারা ক্ষমতা ছাড়ার দিন ২৭ টাকা কেজিতে দাঁড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় দাম কমে ২০০৯ সালের শেষদিকে মোটা চালের কেজি ২২ টাকায় পৌঁছলেও সরকারের বছর না ঘুরতেই দাম বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে তা জরুরি শাসনামলকেও ছাড়িয়ে যায়। একইভাবে বর্তমান সরকারের আমলে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাঝারি ও সরু চালের দাম। চালের পাশাপাশি জরুরি নিত্যপণ্য হিসেবে ঘোষিত সব পণ্যের দামই বর্তমান সরকারের আমলে অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মাসে সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর দেয়া প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বর্তমান সরকারের প্রথম দুই বছরে জরুরি নিত্যপণ্যের দাম সর্বনিম্ন ৩২ থেকে সর্বোচ্চ ৪৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
টিসিবি’র তথ্যে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ঢাকার বাজারে মোটা চাল ৩৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। যারা নিয়মিত বাজার করেন তারা জানিয়েছেন, ওই সময় মোটা চালের কেজি ৪০ টাকায় পৌঁছে ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩১ মার্চ গফরগাঁওয়ে এক জনসভায় বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে চালের কেজি ৪০ টাকা, বিএনপি থাকলে ৯০ টাকা হতো। নির্বাচনের আগে ১০ টাকা কেজিতে চাল খাওয়ানোর প্রতিশ্রুতির কথা তিনি বেমালুম অস্বীকার করে চলেছেন। যদিও প্রধানমন্ত্রীর ওই প্রতিশ্রুতির ভিডিওচিত্র, একাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট এরই মধ্যে পুনঃপ্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে, তাতে তার ওই বক্তব্যের প্রমাণ রয়েছে।
গত ৬ মার্চ বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান জাতীয় সংসদে বিএনপিদলীয় এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে (বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের মাসে) মোটা চালের কেজি ছিল ২৪ থেকে ৩০ টাকা। ২০১০-এর জানুয়ারিতে ছিল ২৫ থেকে ২৮ টাকা এবং ২০১১ সালের জানুয়ারিতে হয়েছে ৩৪ থেকে ৩৭ টাকা কেজি। তিনি জানান, দুই বছরের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে শতকরা ৩১ দশমিক ৪৮ ভাগ। বাণিজ্যমন্ত্রী সংসদে আরও জানান, ২০০৯ সালে সরু চালের কেজি ছিল ৩২ থেকে ৪২ টাকা, ২০১০-এ ছিল ৩১ থেকে ৪৫ টাকা, ২০১১ সালে তা ৩৮ থেকে ৫০ টাকায় পৌঁছায়। মন্ত্রীর তথ্য মতে, দুই বছরে সরু চালের দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। সংসদে দেয়া বাণিজ্যমন্ত্রীর তথ্যমতে, বর্তমান সরকারের প্রথম দুই বছরে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে সর্বনিম্ন ৩২ থেকে সর্বোচ্চ ৪৩৫ শতাংশ পর্যন্ত। এর মধ্যে রসুন ও হলুদের দাম সর্বোচ্চ বেড়েছে বলে তার দেয়া তথ্যে জানা যায়।
টিসিবি’র বাজারদর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, স্বর্ণা ও চায়না ইরি জাতের প্রতি কেজি মোটা চাল গতকাল ৩৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঠিক এক মাস আগে এই চাল ছিল ৩৭ টাকা এবং ঠিক এক বছর আগে ২৮ টাকা। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে এই চালের দাম টিসিবির হিসাবে ২৭ টাকা থাকলেও সেদিন ২৪ টাকা কেজিতেও মোটা চাল বাজারে বিক্রি হয়েছে বলে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে। প্রথম আলো ও আমার দেশ-এর প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ৫ জানুয়ারি খুলনায় ২৪ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি হয়েছে। আর বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন ৭ জানুয়ারি নওগাঁর পাইকারি বাজারে চালের দাম বিশ্লেষণে দেখা যায় ওইদিন প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ছিল ২১ টাকা ৪৪ পয়সা থেকে ২১ টাকা ৯৭ পয়সা।
অন্যদিকে আজ থেকে ঠিক ৫ বছর আগে ২০০৬ সালের ৭ এপ্রিল (খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের শাসনামলের শেষ বছরে) দৈনিক ইত্তেফাক ও প্রথম আলো পত্রিকায় টিসিবি ও নিজস্ব অনুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করে চালসহ নিত্যপণ্যের মূল্যতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথম আলোর ওইদিনের রিপোর্টে দেখা যায়, ওইদিন বাদামতলী ও বাবুবাজারে স্বর্ণা জাতের মোটা চাল ৬০০ টাকা মণ দরে, পারি জাতের মোটা চাল ৬৩০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। আর মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকা মণ দরে। নাজিরশাইল মানভেদে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা মণ দরে। ৪০ কেজির হিসাবে ধরলে স্বর্ণার দাম দাঁড়ায় প্রতি কেজি মাত্র ১৫ টাকা, পারির কেজি ১৫ টাকা ৭৫ পয়সা, মিনিকেট ২২ টাকা ৫০ পয়সা এবং নাজিরশাইল মানভেদে সাড়ে ১৭ টাকা থেকে ২১ টাকা ২৫ পয়সা। অন্যদিকে ২০০৬ সালের ৭ এপ্রিলের ইত্তেফাকে বলা হয়েছে ঢাকার খুচরা বাজারে আগের দিন প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ১৭ টাকা কেজি দরে। ২০০৬ সালের ৫ এপ্রিলের মানবজমিনের প্রতিবেদনে দেখা যায়, হাতিরপুল বাজারে আগের দিন প্রতি কেজি নাজিরশাইল বিক্রি হয়েছে ২২ টাকা । ২০০৬ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস পরিবেশিত খবরে বলা হয়, ‘গতকাল ঢাকার বাজারে পাইকারি চালের দাম মিনিকেট প্রতি কেজি ২২ থেকে ২৪ টাকা, কালিজিরা প্রতি কেজি ২৭.৭০ টাকা, চিনিগুঁড়া ২৮.২০ টাকা, স্বর্ণা প্রতি কেজি ১৫.৫০, মোমপালিম প্রতি কেজি ১৭.৭০ টাকা, লতা প্রতি কেজি ১৮.৬০ টাকা, লতা মোটা প্রতি কেজি ১৫.৫০ পয়সা, পারিজা প্রতি কেজি ১৭.৩৫ টাকা, নাজিরশাইল প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২২ টাকা এবং আটইশ চাল প্রতি কেজি ১৭.৯০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।’
এদিকে ঠিক পাঁচ বছর পর গতকালের (৬ এপ্রিল/২০১১) টিসিবির বাজারদরের তালিকায় দেখা যায়, মোটা চাল স্বর্ণা/চায়না ইরি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩২ থেকে ৩৬ টাকা, উত্তম মানের পাইজাম/লতা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪২ টাকা, সাধারণ মানের পাইজাম/লতা প্রতি কেজি ৩৭ থেকে ৪০ টাকা, নাজির/মিনিকেট উত্তম মানের প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫২ টাকা এবং সাধারণ মানের নাজির/মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫২ টাকায়।
ওদিকে বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের আগের দিন ও ১/১১ সরকারের শেষদিনের টিসিবির বাজারদর অনুযায়ী ঢাকার বাজারে স্বর্ণা ও চায়না ইরি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ২৭ থেকে ২৯ টাকা, সাধারণ মানের পাইজাম/লতা ৩২ থেকে ৩৩ টাকা, উত্তম মানের পাইজাম/লতা ৩৩ থেকে ৩৪ টাকা, সাধারণ মানের নাজির ও মিনিকেট ৩৩ থেকে ৩৮ টাকা এবং উন্নত মানের মিনিকেট চাল ওইদিন বিক্রি হয়েছে ৩৮ থেকে সর্বোচ্চ ৪২ টাকা কেজি দরে।
২০১০ সালে টিসিবির বাজারদর বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এক বছরে নাজির, মিনিকেট, পাইজাম, লতা, স্বর্ণা, চায়না ইরিসহ সব ধরনের চালের মূল্য বেড়েছে গড়ে প্রায় ৩২ শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান অবলম্বন মোটা চাল। এ সময়ে মোটা চালের দর বেড়েছে গড়ে প্রায় ৩৪ শতাংশ।
খুচরা বিক্রেতারা চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য সিন্ডিকেট ও পাইকারি বিক্রেতাদের দায়ী করছেন। অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, চালকল মালিকরা বেশি দামে তাদের কাছে চাল বিক্রি করছেন বলেই তারা দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে একাধিক বিক্রেতা বলছেন, অসাধু চালকল মালিকরা অতিমুনাফার আশায় চাল মজুত করছেন। এর সঙ্গে সরকারি মদতপুষ্ট ব্যক্তিদের জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য চালের দাম বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দাম এত বেশি হওয়ার কথা নয়। এর পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিছু দিন আগে সংসদে দাঁড়িয়েও চালের দামবৃদ্ধির পেছনে ষড়যন্ত্রকারীরা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।
চালের মূল্যবৃদ্ধির জন্য সরকারের তরফ থেকেও চালকল মালিকদের দায়ী করা হয়েছে। কিছু দিন আগে সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন, অনেক চালকল মালিক অতিরিক্ত মুনাফার জন্য চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে বৈঠকে চালকল মালিকরা খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, চালকল মালিকদের কাছে চালের মজুত নেই। অবৈধ ও খণ্ডকালীন মজুতের জন্য ব্যবসায়ীরাই দায়ী। প্রধানমন্ত্রীও প্রায় একই ধরনের অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, মাত্র ১২ থেকে ১৫ মিলারের কাছে জিম্মি চালের বাজার। পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরেও চাল নিয়ে চলছে চালবাজি। মিলাররা ইচ্ছামতো চাল সরবরাহ করেন আবার ইচ্ছামতোই দাম বাড়ান—এমন অভিযোগ পাইকারি চাল ব্যবসায়ীদের।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর দেশে বোরো চালের উত্পাদন হয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ টন। আমন হয়েছে ১ কোটি ৩৫ লাখ টন আর আউশ ২৫ লাখ টন। মোট উত্পাদন হয়েছে ৩ কোটি ৪৭ লাখ টন চাল। এর মধ্যে ১২ ভাগ খাদ্যশস্য বীজ হিসেবে সংরক্ষণ এবং মাঠ থেকে আনা ও মাড়াই প্রক্রিয়ায় নষ্ট হয় বলে ধরা হয়। ফলে এ পরিমাণ খাদ্যশস্য বাজারে আসে না। তাদের দেয়া তথ্যমতে, মোট খাদ্যশস্যের উত্পাদন ৩ কোটি ৫ লাখ ৩৬ হাজার টন। এর সঙ্গে দেশে উত্পাদিত ১০ লাখ টন গম ও আমদানি করা ৩০ লাখ টন খাদ্যশস্য যোগ করলে মোট খাদ্যশস্যের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার টন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, গত অর্থবছরে (২০০৯-১০) বোরো চাল ১ কোটি ৮৩ লাখ টন, আমন ১ কোটি ২২ লাখ টন, আউশ ১৭ লাখ টন এবং গমের উত্পাদন ছিল ৯ লাখ ৬৯ হাজার টন। মোট খাদ্যশস্যের উত্পাদন ছিল ৩ কোটি ৩১ লাখ ৬৯ হাজার টন

এইচটি ইমাম বঙ্গবন্ধু খুনের সঙ্গে জড়িত : কাদের সিদ্দিকী

শীর্ষ নিউজ

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারবে না। কারণ তাদের মন্ত্রিপরিষদেই যুদ্ধাপরাধী রয়েছে। স্বচ্ছভাবে বিচার করতে হলে আগে তাদের বিচার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বঙ্গবন্ধু খুনের সঙ্গে জড়িত। এসব খুনির দিক-নির্দেশনায় চলছে সরকার। এদের নিয়ে কিভাবে যুদ্ধাপরাধের বিচার হবে? গতকাল বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের অঙ্গসংগঠন যুব আন্দোলন ও ছাত্র আন্দোলনের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১০ টাকা কেজি দরে জনগণকে চাল খাওয়াবে বলে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু তারা পুরোপুরি ব্যর্থ। এ ব্যর্থতার দায় নিয়ে তাদের এখনই পদত্যাগ করা উচিত। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম সরকারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীরপ্রতীক, জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। সম্মেলন শেষে জুয়েল খানকে সভাপতি ও খন্দকার মনিরুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট যুব আন্দোলনের ও ডিএম শামীম সুমনকে সভাপতি ও আমিনুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি গঠন করা হয়।